• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:১৬ অপরাহ্ন

৭০০ একর বনভূমির ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন-সমাবেশ

Md Nazim Uddin / ১১ ভিউ টাইম
আপডেট : সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এম.এ আজিজ রাসেল:

৭০০ একর বনভূমির ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র উদ্যোগে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে উখিয়া ও টেকনাফের প্রায় আট হাজার একর বনাঞ্চল উজাড় করা হয়েছে। সেখানে হাতির অভয়ারণ্য, হাতি চলাচলের করিডর ও প্রাকৃতিক জলাধারগুলোও ধ্বংস করা হয়েছে। এখন প্রশিক্ষণ একাডেমির নামে ৭০০ একর বনভূমি উজাড়ের চক্রান্ত চলছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জেলা শাখার সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, কক্সবাজার পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মুহম্মদ নুরুল ইসলাম, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম, বাপা কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ, সাংবাদিক মোর্শেদুর রহমান খোকন, সুশাসনের জন্য নাগরিক কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান, সাংবাদিক ইমাম খাইর, ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল, ১২ সামাজিক সংগঠনের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম, রাজধানী ফ্রেন্ডস সার্কেলের সভাপতি সাংবাদিক এম.এ আজিজ রাসেল, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসলাম মাহমুদ, দরিয়া নগর গ্রিন ভয়েসের সভাপতি পারভেজ মোশারফ, টিম ইলেভেন কক্সবাজারের সভাপতি মো. ইরফান, সেভ দ্য নেচার অব বাংলাদেশের জেলা সভাপতি ওমর ফয়েজ, ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস কক্সবাজারের সমন্বয়কারী জিমরান মো. সায়েক, রাখাইন একতা সংঘের সভাপতি উসেন থোয়েন ও টেকপাড়া রাখাইন ছাত্র পরিষদের সভাপতি উথান্ট অং।

সমাবেশে ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ‘কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভের পাশে শুকনাছড়ির প্রতিবেশ সংকটাপন্ন ও রক্ষিত ৭০০ একর পাহাড়ি বনভূমিতে আমরা প্রশিক্ষণ একাডেমি চাই না। চাই বনাঞ্চলে ঝুঁকিতে থাকা হাতিসহ বন্য প্রাণীর সুরক্ষা। গত তিন বছরে কক্সবাজারের বনাঞ্চলে মারা গেছে ১৭টি বন্য হাতি। ১১ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয়শিবির তৈরিসহ সরকারি—বেসরকারি নানা স্থাপনা তৈরির বিপরীতে উজাড় হয়েছে আরও ১২ হাজার একরের বেশি বনাঞ্চল। এতে শতাধিক বন্য হাতির অভয়ারণ্য উজাড়, খাদ্য ও খাওয়ার পানির তীব্র সংকটে পড়েছে বন্য প্রাণী। এমন পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণ একাডেমির বিপরীতে আরও ৭০০ একর বনাঞ্চল উজাড় হলে বন্য প্রাণীর অস্তিত্ব থাকবে না। তাই প্রশিক্ষণ একাডেমির বিপরীতে বরাদ্দ ৭০০ একর বনভূমির ইজারা বাতিলের দাবিতে আমরা মাঠে নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব।’

বাপা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ বলেন, ‘১০০—৩০০ সরকারি কর্মকর্তার প্রশিক্ষণের জন্য ৭০০ একর জমির দরকার কেন হবে? তারপরও প্রশিক্ষণ একাডেমি স্থাপনের দরকার হলে জেলায় বহু সমতল ভূমি রয়েছে, সেখানে প্রশিক্ষণ একাডেমি তৈরি করলে আমাদের কারও আপত্তি নেই। কিন্তু বনাঞ্চল উজাড় করে কাউকে প্রশিক্ষণ একাডেমি করতে দেওয়া হবে না।’

কক্সবাজারে প্রশিক্ষণ একাডেমির জন্য বরাদ্দ ৭০০ একর বনভূমির ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন। শুক্রবার মেরিন ড্রাইভের শুকনাছড়ি এলাকায়।

বাপা’র সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, পর্যটন শহরের দ্রুত উন্নয়ন ঘটছে বলে সবার নজর পড়েছে সমুদ্রসৈকত এলাকার দিকে। প্রাকৃতিক দৃশ্য, পাহাড়, ঝরনা, বন্য প্রাণীর দৌড়ঝাঁপ দেখতে মানুষ কক্সবাজারে ছুটে এলেও সরকারি আমলারাই তা ধ্বংসের পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। কক্সবাজারের ২৫ লাখ মানুষ ৭০০ একর বনভূমিতে প্রশিক্ষণ একাডেমি চান না।

শুকনাছড়ি সমাজ কমিটির সভাপতি ফয়েজ আহমদ বলেন, বনাঞ্চলের আশপাশে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। প্রশিক্ষণ একাডেমির জন্য বরাদ্দ ৭০০ একর বনভূমিতে রয়েছে হাতিসহ বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য। একাডেমির জন্য এ বনাঞ্চল উজাড় হলে পরিবেশ—প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে। এলাকার মানুষ তা মোটেও চান না।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ফরিদুল আলম শাহীন, কমরেড সমীর পাল, হাজী এনামুল হক, শহীদুল্লাহ, ইসমাঈল সাজ্জাদ, দোলন ধর, মংথে হ্লা, শেখ সেলিম, এম. জসিম উদ্দিন, কল্লোল দে, নেজাম উদ্দিন, কফিল উদ্দিন, ইরফানুল হাসান, ফাতেমা আক্তার লিপি, মো. ইসমাঈল, মো. জয়নাল, মো. আরিফ, জাবেদুল আনোয়ার, শহীদুল ইসলাম সাহেদ, মো. ইলিয়াছ, এড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল, আলমগীর চৌধুরী, ওমর ফয়েজ হৃদয় প্রমূখ।

এতে শহরের ২০টি পরিবেশবাদী সংগঠন অংশ নেয়। সংগঠনগুলো হলো- ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলন, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস কক্সবাজার, টিম ইলেভেন, কক্সবাজার, তারুণ্যের প্রতিবাদ, দরিয়া নগর গ্রীণ ভয়েস, কক্সিয়ান এক্সেপ্রেস, পশ্চিম নতুন বাহারছড়া যুব কল্যাণ সংঘ, রাজধানী ফ্রেন্ডস সার্কেল, সেভ দ্যা নেচার অব বাংলাদেশ, কক্সবাজার জেলা শাখা, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল, কক্সবাজার জেলা, একতা ছাত্র পরিষদ, রাখাইন একতা সংঘ, বড় বাজার রাখাইন যুব সংঘ, টেকপাড়া রাখাইন ছাত্র পরিষদ ও রাখাইন ক্রীড়া সংস্থা।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ