• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন

কক্সবাজারের ঘটনায় অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য দুঃখজনক : হাইকোর্ট

ডেস্ক নিউজ / ১১ ভিউ টাইম
আপডেট : মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২২

মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার ভিন্ন ভিন্ন বিবৃতি বা বক্তব্য ‘কাম্য নয়’ মন্তব্য করে একে ‘দুঃখজনক’ বলেছেন হাইকোর্ট।

কক্সবাজারে পর্যটক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশনা চাওয়ার রিটে শুনানির এক পর‌্যায়ে আজ মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল বলেন, কক্সবাজারের ঘটয়ায় ট্যুরিস্ট পুলিশ ও র‍্যাবের বক্তব্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য এসেছে। এ নিয়ে এক ধরনের অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে। তাছাড়া এ ধরনের স্ববিরোধী বিবৃতি-বক্তব্যের কারণে তদন্তের গ্রহণযোগ্যতাও থাকবে না। সাধারণ মানুষ তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারবে না। তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার আগেই তারা যে বক্তব্য বা বিবৃতি দিচ্ছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে তারা কি চাচ্ছে। মনে হচ্ছে তারা পণ করে নেমেছে ভুক্তোভোগী নারীর চরিত্র তাদের মত করে প্রতিষ্ঠিত করবে। ফলে তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। এ জন্য গত ২২ ডিসেম্বরের ঘটনার বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশনা চাচ্ছি।

তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, একটা অনুসন্ধান চলছে। এর মধ্যে কি আমরা আরেকটা অনুসন্ধানের আদেশ দিব?

তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার ভিন্ন ভিন্ন বিবৃতি বা বক্তব্য বক্তব্য কাম্য নয়, এটি দুঃখজনক। ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য আসলে পরবর্তীতে সত্য ঘটনা উদঘাটন হলেও সাধারণ মানুষ নানা রকম ধারণা তৈরি হয়।

বিচারক বলেন, মিডিয়া তথ্য খুঁজবেই তাই মিডিয়াকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। গ্রেপ্তার -মামলা কিংবা তদন্তের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অ্যাজেন্সি আরেকটি অ্যাজেন্সিকে সহযোগিতা করতে পারে। আর তদন্ত চলাকালে তদন্ত কর্মকর্তাদের কথা কম বলাই ভাল।

এরপর আদালত রিটের শুনানি মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার)রেখে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারাকে নির্দেশ দেয়, কোনো একটি ঘটনা বা মামলার তদন্ত চলাকালে কে কতটুকু কথা বলবে বা বলতে পারবে এ নিয়ে কথা বলতে।

একই সঙ্গে আদালত রিটকারী আইনজীবীকে বলেন, কোনো একটি ঘটনার ‘বিচারিক অনুসন্ধান’ চাওয়ার বিধান কোনো আইনে আছে, পরবর্তী শুনানির দিন সে বিষয়ে জেনে আসতে।

আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল ছাড়াও আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী নিলু। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

কক্সবাজারে পর্যটক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে গতকাল সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম. আব্দুল্লাহ আল হারুন ভুঁইয়া।

জেলা ও দায়রা জজ অথবা মূখ্য বিচারিক হাকিমের নেতৃত্বে এ ধর্ষণকাণ্ডের বিচারিক অনুসন্ধান করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা চাওয়ার পাশাপাশি রুল চাওয়া হয় রিট আবেদনে।

এ ধর্ষণকাণ্ডে জড়িত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে রুল চাওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ প্রধান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, র‌্যাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয় রিটে।

গত ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে ২৫ বছর বয়সী এক পর্যটককে তুলে নিয়ে তার স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে কয়েক দফা ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় একটি চক্রের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ঢাকার এই গৃহবধূর স্বামী কক্সবাজার থানায় মামলা করেন। তাতে চারজনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় আরো তিনজনকে।

মামলার প্রধান আসামি আশিকুল ইসলাম আশিক, এজাহারভুক্ত অন্য দুই আসামি ও সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৮ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় মামলার ২ নম্বর আসামি ইসরাফিল হুদা জয়কে। সে বাহারছড়া এলাকার মো. শফিউদ্দিন শফির ছেলে।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ