• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন

বঙ্গবন্ধুর দেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৬ ভিউ টাইম
আপডেট : বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২

ইমাম খাইর, কক্সবাজার
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। ভূমিহীন থাকবে না। অশিক্ষিত থাকবে না। একটি মানুষও গৃহহীন থাকলে আমাকে জানাবেন। আমি ব্যবস্থা করে দেব।’
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকালে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পরে লবণ চাষিদের উন্নয়নের করেছি। ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির জন্য কাজ করছি। ভবিষ্যতে বিদেশে লবণ রপ্তানির ব্যবস্থা নেব। শুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিদেশীরা দেখার মতো একটি আকর্ষণীয় শুকটি বাজার তৈরি করে দেব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে চিংড়ি উৎপাদনের প্রথম উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ। সিলেটসহ বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার সাথে বিমান যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য কক্সবাজারবাসীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্তিব করা হবে।’
ক্রিড়ার উন্নয়নে আওয়ামী লীগের কৃতিত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘কক্সবাজারে ফুটবল খেলার জন্য পুর্ণাঙ্গ ক্রিড়া কমপ্লেক্স করা হবে। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে আরো উন্নত করা হবে।’
কক্সবাজারের মানুষ সবসময় শেখ হাসিনার হৃদয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিত পর্যটন শহর করতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করে দিয়েছি। সময় আসবে সিঙ্গাপুর থেকে সুন্দর জায়গায় পরিণত হবে মহেশালী।’
তিনি আরো বলেন, ‘মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় আরো দুইটি বিশেষ অঞ্চল করা হবে। এলাকার উন্নয়নই হবে আমাদের সার্বক্ষণিক চিন্তাধারা। ২০১৮ সালে আপনারা অওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিলেন। বৃথা যায় নি। ২৯টা প্রকল্প উদ্বোধন ও ৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। করোনাকালেও অনেক প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। আমার মনটা সর্বদা আপনাদের কাছে পড়ে থাকে।’
জোট সরকারের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘জামায়াত-বিএনপি এ দেশের মানুষকে কি দিয়েছে? দুর্নীতি, পাচার ইত্যাদি তারা পারে। অস্ত্র চোরা কারবারে সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে নিয়ে রাজনীতি করতে চায় বিএনপি।’

‘২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট ঢাকায় আমাদের শান্তিপূর্ণ র‌্যালিতে চোরাগুপ্তা হামলা করে বিএনপি। আল্লাহর ইচ্ছায় সেই হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম। বিএনপি মানুষ মারার দল। আগুন নিয়ে খেলা করে তারা। তারা কিছুই দেয় নি। সব লুটে খেয়েছে। মানুষের জীবনের কোন নিশ্চয়তা ছিল না। লেখাপড়া ধ্বংস করে দিয়েছি। ৪৫ থেকে ৭৫ শতাংশ সাক্ষরতার হারে উন্নীত করেছি। গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা আমরাই দিয়েছি।’
বাজার পরিস্থিতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বে সব কিছুর দাম বেড়েছে। তারপরও মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সে ব্যবস্থা করতেছি। এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ আমরা। আপনারা যা পারেন খালি জায়গা রাখবেন না। চাষবাস করবেন।’
স্বাস্থ্য খাতে সরকারের সফলতার কথা উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা বিনা পয়সায় ভেকসিন দিয়েছি। কারো কাছ থেকে এক টাকাও নিইনি। এক কোটি মানুষকে স্বল্পমূল্যে চাল, ডাল, চিনি কেনার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। একটি মানুষও যাতে না খেয়ে মারা না যায়, সেই ব্যবস্থা করেছি।’
সভায় নিজের অসহায়ত্বও প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বাবা-মা সব হারিয়েছি। আমার চাওয়া পাওয়া বলতে কিছুই নেই। কারো স্নেহ পাইনি। কাজেই আপনাদেরকেই আমার আপনজন মনে করি। যত দূরেই থাকেন, আপনারা আমার হৃদয়ে আছেন। কাছেই আছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রত্যেকটা গ্রামের লোকই শহরের সব ধরণের সুযোগ সুবিধা পাবে। সে জন্য সড়কপথ, রেলপথ উন্নয়ন করে দিচ্ছি। আরো অনেক কাজ বাকি। তার জন্য আওয়ামী লীগকে আবারো ক্ষমতায় আনা দরকার।’
উপস্থিত লাখো জনতার নিকট থেকে ভোটের ওয়াদা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২৪ সালের ১ম সপ্তাহে ভোট হবে। সেই ভোটে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আপনারা ভোট দিবেন?’ জনগণ হাততোলে ভোট দিবেন বলে আশ্বাস দেন।
সবশেষে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রিক্ত আমি শূণ্য আমি, দেওয়ার কিছুই নাই। আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই। আবার আসিব ফিরে। জয় বাংলা।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল, সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, সংসদ সদস্য জাফর আলমসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। সঞ্চালনায় সাথে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম।
তার আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ইনানীর পাটুয়ারটেকস্থ বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের নৌবাহিনীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে, কক্সবাজারের সাথে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ কক্সবাজারবাসীর ১১ দাবি ছিল। যার কোনটিই স্থান পায়নি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায়। তাতে হতাশ হয়েছে জেলার বাসিন্দারা। বিশেষ দুর্দশাগ্রস্ত দ্বীপাঞ্চলের মানুষজন এক্কেবারেই অন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে।


আরো বিভন্ন বিভাগের নিউজ